আজ ১৭ মার্চ, বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৫তম জন্মবার্ষিকী। ১৯২০ সালের এই দিনে তিনি গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত শেখ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা শেখ লুৎফর রহমান এবং মা সায়েরা খাতুন। চার বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়।
শেখ মুজিবুর রহমান শৈশব থেকেই সংগ্রামী চেতনায় গড়ে ওঠেন। ১৯২৭ সালে গিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার শিক্ষাজীবন শুরু হয়। পরে গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে পড়াশোনা করেন। ১৯৪০-এর দশকে ছাত্ররাজনীতির মাধ্যমে রাজনৈতিক জীবনে প্রবেশ করেন। ১৯৪৮ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন এবং ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন।
পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু বাঙালির স্বাধিকার ও স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন শুরু করেন। ১৯৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলন উপস্থাপন করেন, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ভিত্তি গড়ে তোলে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়ে জয়ী হয়ে তিনি বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা হয়ে ওঠেন।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণে তিনি বাঙালিদের মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। এরপর ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হলেও তার নেতৃত্বে বাঙালিরা ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে বিজয় অর্জন করে।
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরে আসেন এবং স্বাধীন বাংলাদেশ পুনর্গঠনে মনোনিবেশ করেন। তবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এক নৃশংস হত্যাকাণ্ডে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ তাকে হত্যা করা হয়।
আজকের এই দিনে জাতি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যিনি তার সারাজীবন উৎসর্গ করেছিলেন বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতার জন্য।