প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ সম্প্রতি জানিয়েছেন যে, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শিগগিরই শুরু হতে যাচ্ছে, যদিও কিছু জটিলতা রয়েছে।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে উইটকফ বলেন, “এটি অবশ্যই শুরু হতে যাচ্ছে, এবং গাজার পরিস্থিতি উন্নত করার জন্য এটি একটি পদক্ষেপ হতে পারে।”
যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের ফলে গাজায় এক সপ্তাহের জন্য বিরতি প্রতিষ্ঠিত হয়, যা মানবিক সহায়তা এবং বন্দি মুক্তির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। তবে, দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা আরও জটিল হতে পারে, কারণ এই ধাপে গাজার যুদ্ধের অবসান ঘটানোর পাশাপাশি হামাসকে গাজার শাসন থেকে সরানোর বিষয়টিও আলোচনায় আসবে।
উইটকফ জানান, যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে হামাসের শাসন চ্যালেঞ্জ করা হবে এবং এটি গাজার পরিস্থিতি রাজনৈতিকভাবে পরিবর্তন করতে পারে। তবে, হামাসকে সরানোর বিষয়ে কোনো স্পষ্ট নির্দেশনা নেই, তবে ট্রাম্প প্রশাসন ও ইসরায়েল কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
দ্বিতীয় ধাপে ১৯ ইসরায়েলি সেনাকে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যদিও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের মতে, হামাসের হাতে বন্দি জীবিত সেনাদের সংখ্যা ১০ জনেরও কম। তবে উইটকফ বিশ্বাস করেন, “সব সেনা জীবিত রয়েছে,” এবং বেসামরিক নাগরিকদের মধ্যে ৩ থেকে ৪ জন সেনাও থাকতে পারে।
দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা কায়রো (মিসর) অথবা দোহা (কাতার) শহরে অনুষ্ঠিত হবে। মিসর ও কাতার এই আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তাদের সহযোগিতায় এ উদ্যোগটি সফল হতে পারে।
উইটকফ আরও বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের লক্ষ্য শুধুমাত্র যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা নয়, বরং গাজার জনগণের জন্য পুনর্বাসনের পরিকল্পনাও বাস্তবায়ন করা। মিসর ও জর্ডানসহ কিছু দেশ ইতোমধ্যে তাদের মানবিক সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করেছে, যা এই প্রক্রিয়াটিকে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে শক্তিশালী করবে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের সফলতা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা হামাসকে একটি সামরিক শক্তি হিসেবে ধ্বংস করব এবং গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে একটি নতুন পরিকল্পনা প্রণয়ন করবেন, যাতে বন্দি মুক্তি এবং গাজার জনগণের জন্য একটি ভিন্ন ভবিষ্যৎ তৈরি করা সম্ভব হবে।”
মিসর ও জর্ডান গাজার পুনর্বাসন, শাসন এবং পুনর্গঠনে অংশগ্রহণ করতে আগ্রহী। মিসর দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রতিষ্ঠায় গাজার জনগণের জন্য মানবিক সহায়তা প্রদান করতে কাজ করছে।
যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার লক্ষ্য হলো গাজার জনগণের জন্য শান্তি, পুনর্বাসন এবং মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা। এটি শুধু যুদ্ধের অবসান নয়, বরং গাজার জন্য একটি স্থায়ী শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যতের দিকে একটি পদক্ষেপ হতে পারে।