আমরা বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করতে চাই। এমন একটা দেশ চাই যেখানে কথা বলার ন্যায্য স্বাধীনতা থাকতে হবে। আমরা এমন স্বাধীনতা চাই না, যা ন্যায্য কথা প্রকাশে কারো মুখে অদেখা তালা ঝুলবে। আদম সন্তানেরা বুকে যা ধারণ করবে মুখে তা প্রকাশ করতে পারবে। বিগত সাড়ে ১৫ বছরে আমরা দেখেছি, সাংবাদিকদের হাতে ছিল অদেখা হ্যান্ডকাপ। তারা চাইলেও সঠিক কথাটি লিখতে পারেনি। তাদেরকে বিগত সরকার স্ক্রিপ্ট লিখে দেওয়া হতো। যা সমস্ত পত্র-পত্রিকায় একই কথা, দাড়ি, কমা ঠিক রেখে প্রকাশ করা হতো।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে ঐতিহাসিক নোমানী ময়দানে কর্মী সম্মেলনের সমাবেশে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এই সময় জামায়াতে আমীর বলেন, চলমান শিক্ষা ব্যবস্থাকে বদলাতে চায়। এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থা চাই, যেখানে লেখাপড়া শেষ করে চাকরির জন্য কারো দ্বারস্থ হতে হবে না। শিক্ষাজীবন শেষ করে যোগ্যতা অনুসারে তার চাকরি পাবার নিশ্চয়তা পাবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আমাদের সন্তানরা শিখিয়েছেন উই ওয়ান্ট জাস্টিস। আমরা বৈষম্য চাই না, ন্যায়বিচার চাই। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যারা নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের কথা দিচ্ছি আমরা সাম্যের বাংলাদেশ গড়বো। আর এটা প্রতিষ্ঠিত করতে আমরা অপেক্ষা করেছি। প্রয়োজনে আরো অপেক্ষা করবো কিন্তু লড়াই ছেড়ে দিব না। এ লড়াই আমাদের অব্যাহত থাকবে।
এছাড়াও মাগুরা জামায়াতে ইসলামীর সংখ্যালঘু সম্প্রদায় কমিটির সভাপতি উত্তম কুমার বলেন, এদেশ পরিচালনায় আমরা সব রাজনৈতিক দলকেই দেখলাম। কিন্তু কেউ আমাদের প্রকৃতপক্ষে পাশে দাঁড়ায়নি। আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর হাত ধরে এদেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে তারা মদিনার সনদ অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। যেখানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরাই সবথেকে বেশি সুবিধা পাবে এবং নিরাপদ থাকবে। আমরা পার্শ্ববর্তী দেশকে বলতে চাই, এদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নিয়ে কোন মাতামাতি বা রাজনীতি করার প্রয়োজন নাই। আমাদের ভবিষ্যৎ আমরা নিজেরাই ঠিক করে নেব। এদেশ আমার এবং আমাদের।
উল্লেখ্য, ডা. শফিকুর রহমান ২০১৯ সালে এবং ২০২১ সালে মাগুরায় এসেছিলেন। সেই সময় জামায়াতে ইসলামী দল হিসেবে নিষিদ্ধ থাকায় স্থানীয় প্রশাসনের নজর এড়িয়ে অতি গোপনে দলীয় এই সফরটি করেছিলেন তিনি। গতকালকের কর্মী সম্মেলনে উপস্থিত তৃতীয়বারের মতো হলেও জনসম্মুখে এই প্রথম তিনি ভাষণ দিলেন।
জেলা আমির অধ্যাপক এম বি বাকেরের সভাপতিত্বে সম্মেলনে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক সাঈদ আহমেদ বাচ্চু। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় (জামাতে আমীর) ডা. শফিকুর রহমান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিসের শুরা সদস্য অধ্যাপক এম বি বাকের, জামাতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের অন্যতম সদস্য মোবারক হোসেন, যশোর জেলা শাখার সাবেক আমির মো. আজিজুর রহমান, জেলার সাবেক আমির ও যশোর কুষ্টিয়া অঞ্চলের সহকারী পরিচালক আব্দুল মতিন ও যশোর কুষ্টিয়া অঞ্চলের সহকারী পরিচালক অধ্যাপক ড. আলমগীর বিশ্বাসসহ জেলা উপজেলা থেকে আগত নেতাকর্মীবৃন্দ।