বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার পরিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের যমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ অভিযোগটি দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি কোনো নির্দিষ্ট নাম উল্লেখ করেননি, তবে ঘটনার প্রমাণ সংগ্রহের বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন।
স্নিগ্ধ সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা নিজেদের উদ্যোগে মুগ্ধ হত্যার প্রমাণ সংগ্রহের চেষ্টা করেছি। ঘটনার সময়ের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে এবং ফরেনসিকের মাধ্যমে তার চেহারা সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করা হবে।”
তিনি আরো জানান, অভিযোগে এখনও কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি, তবে এখন শুধু অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল যদি তদন্ত শুরু করে, তবে অপরাধীদের খুঁজে বের করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে উত্তরা এলাকায় আজমপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত হন। মুগ্ধ তখন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে স্নাতক পাস করে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)-এ এমবিএ পড়ছিলেন। মৃত্যুর সময় তার গলায় রক্তমাখা বিইউপির আইডি কার্ড ছিল।
মুগ্ধের হত্যাকাণ্ডের সময় তার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি আন্দোলনকারীদের মাঝে পানি বিতরণ করছেন এবং পরে তাকে পুলিশের গুলিতে নিহত হতে দেখা যায়। মুগ্ধের মৃত্যু, বিশেষ করে তার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর, বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনে নতুন এক দিগন্ত উন্মোচন হয় এবং তা ব্যাপক জনসমর্থন পায়।
মুগ্ধের বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান এবং মা শাহানা চৌধুরী। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া। তিন ভাইয়ের মধ্যে মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ এবং মুগ্ধ ছিলেন যমজ।
এই অভিযোগ দায়েরের পর, আইনজীবীরা আশাবাদী যে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে মুগ্ধ হত্যার ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে।