ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ ৪ বছরের বিরতির পর ডাকসু (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ) নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন জানিয়েছে, আগামী জানুয়ারির শেষে কিংবা ফেব্রুয়ারির শুরুতে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে, এ নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং ছাত্রশিবির প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানালেও, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। তারা মনে করছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তা ছাত্ররাজনীতির জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি নাও করতে পারে। তারা এক্ষেত্রে সময়ের স্বচ্ছতা ও সঠিক পরিকল্পনার পক্ষে।
ডাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদে কোনো নির্বাচিত প্রতিনিধির উপস্থিতি নেই। এর মধ্যে ছাত্রদের মধ্যে একটি আন্দোলন উঠে আসে, যার ফলস্বরূপ ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান পরবর্তী নির্বাচনের দাবিতে সাড়া দেওয়া হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশা করেন। তারা জানাচ্ছেন, গত কয়েক বছরে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের অনুপস্থিতি এবং ফ্যাসিবাদী পরিবেশে ছাত্ররা নিপীড়নের শিকার হয়েছে, কিন্তু জুলাই অভ্যুত্থানের পর ক্যাম্পাসে গণতন্ত্রের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
অন্যদিকে, ছাত্রদল মনে করে, নির্বাচনের আয়োজন দ্রুত হতে গেলে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিপদ সৃষ্টি করতে পারে। তারা মনে করে, বিশেষভাবে ছাত্রদল এবং অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের মধ্যে নতুন করে সম্পর্ক স্থাপন এবং ছাত্ররাজনীতির সঠিক ধারণা তৈরি করতে কিছুটা সময় প্রয়োজন।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরও নির্বাচনের সময়সূচির বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে, তবে বাম সংগঠনগুলোর একটি অংশ শিবিরের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে আপত্তি তুলেছে। তারা ছাত্রশিবিরকে মুক্তিযুদ্ধের গণহত্যার সঙ্গী জামায়াতের অঙ্গসংগঠন বলে উল্লেখ করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ছাত্র সংগঠনগুলোর ভিন্নমত বিবেচনায় নিয়ে, দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের পথে এগিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, “অধিকাংশ শিক্ষার্থীর চাওয়া অনুযায়ী আমরা ডাকসু নির্বাচন দ্রুত বাস্তবায়ন করব।”