অগ্রহায়ণের ঝকঝকে আকাশ। ঘাসের ডগায় শিশিরবিন্দুর আলতো পরশ আর মিষ্টি রোদের স্নিগ্ধতা জানান দিচ্ছে বছর ঘুরে আবার এসেছে অগ্রহায়ণ। মাঠে মাঠে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন দুলছে। বাতাসে হিমগন্ধে শীতের মাঠ জুড়ে সোনারঙা ধানের ছড়াছড়ি। আমন ধানের চনমনে গন্ধে মৌলভীবাজার জেলার কৃষক-কৃষাণীরা। ঘাম ঝরানো স্বপ্নের ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষক। আর তাতে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। ধান কাটা, মাড়াই ও শুকানোর কাজে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁরা। অনেকে ধান কেটে ফসল ঘরে তুলেছেন। আবার কোনো জমির পাশে পাকা সড়কে শুকানো হচ্ছে ধান। জমি ও সড়কে খড় শুকানো হচ্ছে। মৌলভীবাজার জেলায় চলতি আমন মৌসুমে মাঠে মাঠে সোনালী আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মৌলভীবাজার জেলা রাজনগর উপজেলাসহ বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও কৃষকেরা খেতে পাকা ধান কাটছেন। অনেকে কাঁধভারে সেই ধান নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। কোথাও ধান এখনো পুরোপুরি পাকেনি। ধানে কিছুটা সোনালি রং ধরলেও সবুজ রয়ে গেছে।
এখন অগ্রহায়ণের মাঠে মাঠে পাকা আমন ধান কাটার উৎসব চলছে। ঘরে ঘরে কৃষকের কোনো অবসর নেই এ ছাড়া মাঠ থেকে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের জন্য শ্রমিকদের মুজুরি মূল্য তুলনামুলক অন্য বছরের তুলনায় এ বছর শ্রমিকদের মুজুরি মূল্য বেশি । পাকা ধান নিয়ে বাড়ি ফিরছেন কৃষক। সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসের দিকে আমন ধান কাটা হয়। এবছর অনেক মাঠেই এক মাস আগেই এই ধান পাকতে শুরু করেছে। আশা করছি ধান ক্ষেতের গাছ ও শীষ দেখে মনে হচ্ছে গতবারের তুলনায় ফলন বেশী ফলন পাবো।
কৃষকরা জানান, সাত বিঘা জমিতে রোপা আমনের আবাদ করেন। কৃষক ভাইদের আমি বলব যে আমাদের পরামর্শ নিয়ে যেন তারা জমিতে কীটনাশক ব্যবহার করে। আমরা তো কৃষি কাজ করি। ধানের দর যদি একটু বেশি হতো তাহলে ভালো হতো কারণ ধান রোপণ করতে সার খরচ, হালের খরচ, কীটনাশক এর খরচ বেশি হয়। যদি ধানের বিক্রয়মূল্য বেশি হয় তাহলে কৃষকদের অনেক উপকার হয়। সার, কীটনাশক এগুলার দাম তো বাড়তি। অনেক কষ্টে আমরা নিজেরাই বীজ কিনে ধান রোপণ করেছি। সরকারের কাছ থেকে আমরা কোনো বীজ পাইনি। এখন ন্যায্যমূল্যে ধানগুলো বিক্রি করতে চাই। এবারের ধানের মন ৮০০-১০০০ টাকা এই মূল্যে তো আমাদের লাভ হয় না।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের উপপরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, মৌলভীবাজার জেলায় ১ লক্ষ ১ হাজার হেক্টর জমি ছিল। এ বছর প্রায় ৯৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ২৬% শতাংশ জমির ধান কাটা হয়ে গেছে।
কিছু কিছু জমি রোপণ করতে দেরি হয়েছে, মাঠের সব ধান কাটতে আরও ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগবে। কৃষি বিভাগ থেকে আমরা শুধু বীজ দিয়ে থাকি পাশাপাশি পারো দিয়ে থাকি। কিন্তু কীটনাশক আর অন্যান্য কিছু কৃষি বিভাগ থেকে দেওয়া হয় না।