চাঁদপুরের মতলব উত্তরে ৪৪ বছর ইমামতি করার পর ইমামকে রাজকীয় ও অশ্রুসিক্ত বিদায় দিয়েছেন গ্রামবাসী। উপজেলার শিকারীকান্দি বাইতুল আমান জামে মসজিদের ইমাম হিসেবে এক টানা ৪৪ বছর বেশ সুনামের সাথে ইমামতি করেন মাওলানা আব্দল খালেক।
রোববার (০৬ অক্টোবর) শেষবারের মতো ইমামতি শেষে এলাকাবাসী তাকে নানা আয়োজনে বিদায় জানান। ৭৪ বছর বয়সী এই ইমামকে বিদায় জানানোর সময় আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন মুসল্লি এলাকাবাসী মুসল্লিদের এমন ভালোবাসায় খুশিতে কেদে ফেলেন তিনি। মতলব উত্তরের ইতিহাসে কোনো ইমামের এমন রাজকীয় বিদায় এই প্রথম বলেও জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের শিকারীকন্দি গ্রামে সকাল থেকেই ইমামকে বিদায় দেওয়ার নানা আয়োজনে ব্যস্ত ছিলেন এলাকাবাসী। সাজানো হয় ঘোড়ার গাড়ি। আয়োজন করা হয় মুসল্লিদের জন্য খাবার। সকালে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে ইমাম ঘোড়ার গাড়িতে ওঠার আগে শেষবারের মতো উপস্থিত মুসল্লি ও এলাকাবাসীর কাছে নিজের ভুল ত্রুটির জন্য ক্ষমা চান। পরে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা দিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে পার্শ্ববর্তী কচুয়া উপজেলায় তার নিজ বাড়িতে নিয়ে যান এলাকাবাসী।
এর আগে সকালে মসজিদের বিদায়ী ইমাম মাওলানা আব্দুল খালেকের হাতে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে নগদ টাকা তুলে দেন মুসল্লিরা। এছাড়াও শত শত মুসল্লির উপস্থিতিতে ঘোড়ার গাড়িতে উঠানো হয় ইমামকে। সামনে-পেছনে মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে বিভিন্ন স্লোগানে ইমামের নিজ বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসা হয়।
বিদায়ী ইমাম মাওলানা আব্দলু খালেক বলেন, ১৯৮০ সাল থেকে এই মসজিদে ইমামতি করে আসছি। ৪৪ বছরের বিদায়বেলায় এত ভালোবাসা ও সম্মান দেওয়ায় আমি সত্যিই মুগ্ধ। এমন আয়োজন প্রতিটি মসজিদে করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মসজিদ কমিটির কোষাধক্ষ্য মো. সেলিম বলেন, মতলব উত্তরে ইমামের এমন রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা এই প্রথম। এর আগে কখনো উপজেলায় এমনভাবে কোনো ইমামকে বিদায় দেওয়া হয়নি।
মসজিদ কমিটির সভাপতি আলহাজ শেখ নজরুল ইসলাম বলেন, আজকের দিনটি আমাদের জন্য বেদনার। কেননা আত্মার আত্মীয়কে বিদায় দিচ্ছি, যিনি দীর্ঘ ৪৪ বছর দ্বিনি শিক্ষায় আমাদের আলোকিত করেছেন।