ঢাকা ০৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
পাকিস্তানে যাত্রীবাহী ট্রেনে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা বিএনপিতে কোনো বেয়াদবের জায়গা থাকবে না: হীরা মানুষের কাজ করতে হবে হৃদয় উজার করে: মহসিন মিয়া মধু পাবনা জেল সুপারের মানবিকতায় কারাগার থেকে নিজ দেশে ফিরে গেলেন নেপালী যুবক পাবনায় শিশু ধর্ষণচেষ্টা মামলায় অভিযুক্ত গ্রেপ্তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন: পিআইও আবুল কালাম আজাদ ও স্ত্রী-ছেলের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা মির্জাপুরে মহানবী (সা.) কে নিয়ে কটূক্তি করায় যুবক গ্রেপ্তার রমজানে ৫০০ জন রোজাদারদের মাঝে ইফতার বিতরণ করছে “মানুষের পাশে আমরা, যশোর” বিজিবির অভিযানে ২০ লাখ টাকার মাদকসহ আটক ১০ বিবেকের জাগরণ: কখন আসবে আমাদের চেতনার আলো? রাজশাহীতে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, দুর্ভোগে রোগীরা বদলগাছীতে জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস উদযাপন

মির্জাপুরে শিশু ধর্ষণ সালিশে ধর্ষকের দেড় লাখ টাকা জরিমানার ৫৮ হাজার টাকা বাকি

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ২য় শ্রেণিতে পড়ুয়া মাদ্রাসা শিক্ষার্থী (১০) ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের একটি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় মাতব্বরগণ গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করে। সালিশে ধর্ষককে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার ৯২ হাজার টাকা নগদ দিলেও ৫৮ হাজার টাকা বাকি রাখা হয়। ভুক্তভোগী ওই শিশু ও তার পরিবারের লোকজন ভয়ে মুখ না খুললেও ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যায়।

শনিবার (০৮ মার্চ) দুপুরে মির্জাপুর থানা পুলিশ ভুক্তভোগী শিশু ও তার মাকে থানায় নিয়ে এসে ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন ধর্ষক সিএনজি চালক উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের কুড়িপাড়া গ্রামের নওশের মিয়ার ছেলে ফিরোজ মিয়া (৪৫)। শিশুটি নানীর বাড়ির কাছে জমিতে সার দিচ্ছিলো। ওই জমির সাথেই শিশুটি বড়ই গাছ থেকে বড়ই পারছিল। তখন ফিরোজ মিয়া শিশুটিকে ডেকে নিয়ে একটি টয়লেটের ভেতর ধর্ষণ করে। পরে ধর্ষণের কথা কাউকে না বলার কথা বলে ভয়ভীতি দেখায়। ধর্ষণের দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করা হয়েছে এবং সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া এবং প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয় শিশুটিকে। ফিরোজ শিশুটিকে ডেকে নিয়ে যাওয়ার শব্দ শিশুটির মা শুনেছিলেন বলে শিশুর মা জানান।

ঘটনার পর বাড়িতে গিয়ে শিশুটি চুপচাপ থাকায় তাকে জিজ্ঞেস করা হলেও কিছু বলছিল না। বারবার জিজ্ঞেস করায় একপর্যায়ে কান্না করে পুরো ঘটনা মাকে খুলে বলে ভুক্তভোগী শিশু। পরে সময় পার হওয়ার সাথে সাথে পাড়া প্রতিবেশীরা ঘটনা জেনে যায়।

ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় মালেক, বাবুল ও ফাজুসহ কয়েকজন মাতব্বর ঘটনার এক সপ্তাহ পর গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করে। সালিশে ধর্ষক ফিরোজকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। গ্রাম্য মাতাব্বরদের চাপে সালিশ মেনে নিলেও জরিমানার ৫৮ হাজার টাকা এখনো বাকি রয়ে গেছে বলে শিশুটির মা জানান। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে ধর্ষককে আটক করতে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। ধর্ষক ফিরোজ কয়েকদিন আগেই এলাকা থেকে পালিয়েছে বলে জানা গেছে।

শিশুটির মা জানান, তার স্বামী সৌদি আরব প্রবাসী। এক ছেলে, এক মেয়ে নিয়ে বাড়িতে থাকেন। ঘটনার কথা ভয়ে প্রকাশ করেন নাই। তবুও জানাজানি হয়ে গেছে। তিনি বলেন, “আমাদের পাশে দাঁড়ানোর মতো কোনো অভিভাবক নেই। গ্রামের মাতব্বরদের কারণে সালিশ মেনে নিতে হয়েছে। মেয়ের বাবাও ঘটনা শুনেছেন। তিনি অপরাধীদের বিচার চেয়েছেন।”

মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোশারফ হোসেন জানান, এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে। ধর্ষককে ধরতে শুক্রবার রাত ভর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে বলে তিনি জানান।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

পাকিস্তানে যাত্রীবাহী ট্রেনে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা

Verified by MonsterInsights

মির্জাপুরে শিশু ধর্ষণ সালিশে ধর্ষকের দেড় লাখ টাকা জরিমানার ৫৮ হাজার টাকা বাকি

আপডেট সময় ১১:৪৭:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ২য় শ্রেণিতে পড়ুয়া মাদ্রাসা শিক্ষার্থী (১০) ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের একটি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় মাতব্বরগণ গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করে। সালিশে ধর্ষককে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার ৯২ হাজার টাকা নগদ দিলেও ৫৮ হাজার টাকা বাকি রাখা হয়। ভুক্তভোগী ওই শিশু ও তার পরিবারের লোকজন ভয়ে মুখ না খুললেও ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যায়।

শনিবার (০৮ মার্চ) দুপুরে মির্জাপুর থানা পুলিশ ভুক্তভোগী শিশু ও তার মাকে থানায় নিয়ে এসে ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন ধর্ষক সিএনজি চালক উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের কুড়িপাড়া গ্রামের নওশের মিয়ার ছেলে ফিরোজ মিয়া (৪৫)। শিশুটি নানীর বাড়ির কাছে জমিতে সার দিচ্ছিলো। ওই জমির সাথেই শিশুটি বড়ই গাছ থেকে বড়ই পারছিল। তখন ফিরোজ মিয়া শিশুটিকে ডেকে নিয়ে একটি টয়লেটের ভেতর ধর্ষণ করে। পরে ধর্ষণের কথা কাউকে না বলার কথা বলে ভয়ভীতি দেখায়। ধর্ষণের দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করা হয়েছে এবং সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া এবং প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয় শিশুটিকে। ফিরোজ শিশুটিকে ডেকে নিয়ে যাওয়ার শব্দ শিশুটির মা শুনেছিলেন বলে শিশুর মা জানান।

ঘটনার পর বাড়িতে গিয়ে শিশুটি চুপচাপ থাকায় তাকে জিজ্ঞেস করা হলেও কিছু বলছিল না। বারবার জিজ্ঞেস করায় একপর্যায়ে কান্না করে পুরো ঘটনা মাকে খুলে বলে ভুক্তভোগী শিশু। পরে সময় পার হওয়ার সাথে সাথে পাড়া প্রতিবেশীরা ঘটনা জেনে যায়।

ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় মালেক, বাবুল ও ফাজুসহ কয়েকজন মাতব্বর ঘটনার এক সপ্তাহ পর গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করে। সালিশে ধর্ষক ফিরোজকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। গ্রাম্য মাতাব্বরদের চাপে সালিশ মেনে নিলেও জরিমানার ৫৮ হাজার টাকা এখনো বাকি রয়ে গেছে বলে শিশুটির মা জানান। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে ধর্ষককে আটক করতে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। ধর্ষক ফিরোজ কয়েকদিন আগেই এলাকা থেকে পালিয়েছে বলে জানা গেছে।

শিশুটির মা জানান, তার স্বামী সৌদি আরব প্রবাসী। এক ছেলে, এক মেয়ে নিয়ে বাড়িতে থাকেন। ঘটনার কথা ভয়ে প্রকাশ করেন নাই। তবুও জানাজানি হয়ে গেছে। তিনি বলেন, “আমাদের পাশে দাঁড়ানোর মতো কোনো অভিভাবক নেই। গ্রামের মাতব্বরদের কারণে সালিশ মেনে নিতে হয়েছে। মেয়ের বাবাও ঘটনা শুনেছেন। তিনি অপরাধীদের বিচার চেয়েছেন।”

মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোশারফ হোসেন জানান, এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে। ধর্ষককে ধরতে শুক্রবার রাত ভর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে বলে তিনি জানান।