খুলনার পাইকগাছায় চাচাকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে বাড়িসহ সমস্ত সম্পত্তি দখল করে রাখা ছাত্রলীগ নেতা উমায়ের কবির ও তার ভাইদের অত্যচারে অতিষ্ঠ হয়ে হাজার হাজার গ্রামবাসী মিলে উমায়েরসহ তার এক সহযোগীকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের কাছে হস্তন্তর করেছে এলাকাবাসী।
সরেজমিনে ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার তোকিয়া গ্রামের মৃত হারুন সরদারের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা উমায়ের কবির বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সাবেক সংসদ সদস্য আকতারুজ্জামান বাবুর আস্থাভাজন হয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে মাস্তানি, চাঁদাবাজি, ঘেড় দখল, নারী কেলেঙ্কারি, বিভিন্নি অপকর্মের হোতা, ভাইদের সাথে নিয়ে লাঠির ভয় দেখিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে রাখে।
গত ১১ অক্টোবর আপন চাচা রওশন সরদারের স্ত্রী ও ৩ সন্তানদের সাথে মারপিট করে উমায়েরসহ তার ২ ভাই। এ ঘটনায় হাসপাতালে কয়েকদিন চিকিৎসা নিলেও জীবনের নিরাপত্তার জন্য আজও বাড়ি ফিরতে পারেননি রওশন সরদারের পরিবার।
গত ১১ নভেম্বর, ২০২৪ তারিখে পাইকগাছার ইজিবাইক স্ট্যান্ডে বৃদ্ধ শামসুর রহমানকে (৭০) উমায়ের কবিরের নেতৃত্বে তার ভাই ইসাহাকসহ কয়েকজন ফ্লিমি স্টাইলে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে হাত ও বুকের ২টি পাজড় ভেঙ্গে দেয়। শামসুর মামলা করলেও তাদের ভয়ে এখন এলাকা ছাড়া।
মামলা সূত্রে আরও জানা যায়, গত ৫ মার্চ সকালে তোকিয়া গ্রামের ইলিয়াস কবির ও চাচা রওশন সরদারকে গদাইপুর বাজারে উমায়ের কবিরের নেতৃত্বে অপর দুই ভাই ইসহাক এবং ওসামা মিলে মারধর করে। একইদিন সন্ধ্যায় কবির বাড়িতে যাওয়ার সময় আবারও ৩ ভাই এবং মা মিলে দা ও লোহার রড নিয়ে আক্রমণ করে। এ সময় উপজেলা নার্সারি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামাল সরদার ঠ্যাকাতে গেলে কামালকেও বেপরোয়াভাবে মেরে মারাত্মক আহত করে। এ ঘটনায় কামালের শ্যালোক শামীম সরদারও গুরুতর আহত হয়।
এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে গ্রামের সকল শ্রেণি-পেশার হাজার হাজার মানুষ তাদের প্রতি বিরক্ত ও তিক্ততা থেকে একজোট হয়ে ছাত্রলীগ নেতা উমায়েরসহ এক সহযোগীকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের কাছে তুলে দেয়। সর্বশেষ মারপিটের ঘটনায় কামাল সরদার বাদী হয়ে পাইকগাছা থানায় মামলা করে (মামলা নাম্বার- ৭/২৫)।
পাইকগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ সবজেল হোসেন জানান, মারামারির ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে এবং উমায়ের কবির ও তার সহযোগী ওয়ালিদ সরদারকে আটক করা হয়েছে। অন্য আসামীদের গ্রেফতারের চেস্টা অব্যাহত রয়েছে।