ঢাকা ০১:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫, ৮ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
শ্রীমঙ্গল উপজেলা, পৌর ও সদর ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত বেনাপোলে দরিদ্র ও পথচারীদের ইফতার বিতরণ মিষ্টি কুমড়া চাষ করে লোকসান, ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত কৃষক ফিলিস্তিনে নির্বিচারে হত্যার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানববন্ধন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অর্জিত জ্ঞান শিক্ষাজীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশঃ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা ইফতার সামগ্রী বিতরণ করল এপেক্স ক্লাব অব লামা কমলগঞ্জে যুবদলের ইফতার বিতরণ মৌলভীবাজারের রাজনগরে ডিবি পুলিশকে মারধর করে চেয়ারম্যাকে ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩ টাকার টিকিট বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়: প্রশাসনের নীরব ভূমিকা ফিলিস্তিন ও ভারতে মুসলমানদের হত্যার প্রতিবাদে শ্রীমঙ্গলে বিক্ষোভ মিছিল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে হাসনাতের সাথেই আমরা ঢাকা ওয়াসার সাবেক এমডি তাকসিম এ খানের অনুসারীদের নেতৃত্বে ছিল সাংকেতিক নাম

এক বছরে পথে-পরিবহনে প্রায় দুই হাজার নারী নির্যাতিত: সেভ দ্য রোড

নারী নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও সড়ক নিরাপত্তা বিধানে ৭ দফা দাবিতে 'সেভ দ্য রোড' এর প্রতিবেদন পাঠ, সমাবেশ ও র‍্যালি

২০২৪ সালের মার্চ থেকে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গত ১ বছরে রেল, নৌ ও সড়কপথের পাশাপাশি রেল-নৌ-বাস স্টেশন এবং ফুটপাতে নারীদের শ্লীলতাহানি ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ১,৭৫৮টি, এবং ধর্ষিত হয়েছেন ৪১ জন নারী। আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে কেন্দ্র করে সেভ দ্য রোড-এর উদ্যোগে গণপরিবহনে ৪০ শতাংশ নারী আসন এবং নির্যাতন ও ধর্ষণ রোধে কঠোর শাস্তির দাবিতে প্রতিবেদন পাঠ, সমাবেশ ও র‌্যালি থেকে এই তথ্য দিয়েছেন ‘সেভ দ্য রোড’ এর মহাসচিব শান্তা ফারজানা।

শুক্রবার (০৭ মার্চ) বেলা সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে লিখিত প্রতিবেদনে তিনি আরো জানান, গত ১ বছরে রেলপথে ৫৬২টি নির্যাতন, ১১টি ধর্ষণ; সড়কপথে ৪১৩টি নির্যাতন ও ২০টি ধর্ষণ; নৌপথে ৩২৫টি নির্যাতন ও ৫টি ধর্ষণ এবং রেল, নৌ, বাস স্টেশন ও ফুটপাতে ৪৫৮টি নির্যাতন ও ৫টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।

‘সেভ দ্য রোড’ এর প্রতিষ্ঠাতা মোমিন মেহেদীর সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির ভাইস চেয়ারম্যান সোনিয়া দেওয়ান প্রীতি, সদস্য ওয়াজেদ রানা, কন্ঠশিল্পী রিয়া খান, রিয়াদ ইসলাম, কাজী মুন্নী আলম, মেহেদী হাসান, মোনালিসা দেওয়ান অশ্রু প্রমুখ।

এ সময় সংগঠনটির পক্ষ থেকে নির্যাতন, নিপীড়ন ও ধর্ষণরোধের পাশাপাশি সড়ক, রেল ও নৌপথ দুর্ঘটনা রোধে ৭ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হল-

১. প্রতি ৩ কিলোমিটারে পুলিশ বুথ বা ওয়াচ টাওয়ার এবং সিসি ক্যামেরা স্থাপন।

২. মিরসরাই ট্রাজেডিতে নিহতদের স্মরণে ১১ জুলাইকে ‘দুর্ঘটনামুক্ত পথ দিবস’ ঘোষণা করা।

৩. সব সড়ক প্রশস্ত করা ও ফুটপাত দখলমুক্ত করা।

৪. সড়কপথে ধর্ষণ ও হয়রানি রোধে ফিটনেসবিহীন বাহন নিষিদ্ধ, ৪০ শতাংশ নারী আসন নিশ্চিতকরণ এবং কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ চালক-সহযোগী নিয়োগ ও হেলপারদের জাতীয় পরিচয়পত্র, গ্যারান্টারসহ ডেটাবেজ তৈরি করা।

৫. সড়ক, নৌ, রেল ও আকাশপথ দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে সরকারিভাবে কমপক্ষে ২০ লাখ এবং আহতদের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া।

৬. ‘ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স রুল’ বাস্তবায়ন এবং ‘ট্রান্সপোর্ট পুলিশ ব্যাটালিয়ন’ গঠন করা।

৭. সড়ক দুর্ঘটনার তদন্ত ও সাজা দ্রুত কার্যকর এবং ট্রান্সপোর্ট পুলিশ ব্যাটালিয়ন গঠনের আগ পর্যন্ত হাইওয়ে পুলিশ, নৌ-পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর দায়িত্বশীলতা ও সচেতনতা বৃদ্ধি।

শান্তা ফারজানা লিখিত প্রতিবেদনে আরও জানান, “দৈনিক যুগান্তর, দৈনিক ইনকিলাব, দৈনিক নয়াদিগন্ত, দৈনিক দিনকাল, দৈনিক প্রথম আলো, দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক কালের কন্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, দৈনিক জনকন্ঠ, দৈনিক কালবেলাসহ ১৭ টি জাতীয় দৈনিক, বাংলা ভিশন, আরটিভি, জিটিভি, যমুনা নিউজ, মাছরাঙ্গা, এটিএন বাংলাসহ ২০ টিভি-চ্যানেল, বিবিসিবাংলা, জাগো নিউজ, বাংলা নিউজ, বিডিনিউজসহ ২২ টি নিউজ পোর্টাল এবং স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ‘সেভ দ্য রোড’ এর স্বেচ্ছাসেবীগণের দেয়া তথ্যানুসারে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।”

তিনি জানান, “দেশের আকাশ, সড়ক, রেল ও নৌপথ দুর্ঘটনামুক্ত করতে ১৮ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছে ‘সেভ দ্য রোড’। ২০২৪ সালের মার্চ থেকে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গত এক বছরে রেল, নৌ ও সড়কপথে চরম নৈরাজ্য ও আইন না মানার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে, যা নারীদের নিরাপত্তাহীনতাকে আরও উস্কে দিচ্ছে। এতে শ্লীলতাহানি, নির্যাতন ও ধর্ষণের মতো ঘটনা বেড়েছে।”

শান্তা ফারজানা বলেন, “সড়ক, রেল ও নৌপথকে নারীবান্ধব ও নিরাপদ করতে হলে মালিক, শ্রমিক, প্রশাসন ও সাধারণ জনগণের মধ্যে সমন্বয় জরুরি। পাশাপাশি দুর্ঘটনা রোধে গবেষণা ও সচেতনতা কার্যক্রম বাড়ানোর জন্য সরকারি সহায়তা প্রয়োজন।”

সংগঠনটি অন্তবর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে সুদৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

২০০৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে পথচলা শুরু করা ‘সেভ দ্য রোড’ বিগত ১৮ বছর ধরে দেশের চারটি পথ—আকাশ, সড়ক, রেল ও নৌপথ—দুর্ঘটনামুক্ত করার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করছে। সংগঠনটি তাদের মূল স্লোগান ‘পথ দুর্ঘটনা থাকবে না আর’ ধারণ করে বিভিন্ন সময় সচেতনতা, গবেষণা ও স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

শ্রীমঙ্গল উপজেলা, পৌর ও সদর ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

Verified by MonsterInsights

এক বছরে পথে-পরিবহনে প্রায় দুই হাজার নারী নির্যাতিত: সেভ দ্য রোড

আপডেট সময় ১০:৩৫:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মার্চ ২০২৫

২০২৪ সালের মার্চ থেকে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গত ১ বছরে রেল, নৌ ও সড়কপথের পাশাপাশি রেল-নৌ-বাস স্টেশন এবং ফুটপাতে নারীদের শ্লীলতাহানি ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ১,৭৫৮টি, এবং ধর্ষিত হয়েছেন ৪১ জন নারী। আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে কেন্দ্র করে সেভ দ্য রোড-এর উদ্যোগে গণপরিবহনে ৪০ শতাংশ নারী আসন এবং নির্যাতন ও ধর্ষণ রোধে কঠোর শাস্তির দাবিতে প্রতিবেদন পাঠ, সমাবেশ ও র‌্যালি থেকে এই তথ্য দিয়েছেন ‘সেভ দ্য রোড’ এর মহাসচিব শান্তা ফারজানা।

শুক্রবার (০৭ মার্চ) বেলা সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে লিখিত প্রতিবেদনে তিনি আরো জানান, গত ১ বছরে রেলপথে ৫৬২টি নির্যাতন, ১১টি ধর্ষণ; সড়কপথে ৪১৩টি নির্যাতন ও ২০টি ধর্ষণ; নৌপথে ৩২৫টি নির্যাতন ও ৫টি ধর্ষণ এবং রেল, নৌ, বাস স্টেশন ও ফুটপাতে ৪৫৮টি নির্যাতন ও ৫টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।

‘সেভ দ্য রোড’ এর প্রতিষ্ঠাতা মোমিন মেহেদীর সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির ভাইস চেয়ারম্যান সোনিয়া দেওয়ান প্রীতি, সদস্য ওয়াজেদ রানা, কন্ঠশিল্পী রিয়া খান, রিয়াদ ইসলাম, কাজী মুন্নী আলম, মেহেদী হাসান, মোনালিসা দেওয়ান অশ্রু প্রমুখ।

এ সময় সংগঠনটির পক্ষ থেকে নির্যাতন, নিপীড়ন ও ধর্ষণরোধের পাশাপাশি সড়ক, রেল ও নৌপথ দুর্ঘটনা রোধে ৭ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হল-

১. প্রতি ৩ কিলোমিটারে পুলিশ বুথ বা ওয়াচ টাওয়ার এবং সিসি ক্যামেরা স্থাপন।

২. মিরসরাই ট্রাজেডিতে নিহতদের স্মরণে ১১ জুলাইকে ‘দুর্ঘটনামুক্ত পথ দিবস’ ঘোষণা করা।

৩. সব সড়ক প্রশস্ত করা ও ফুটপাত দখলমুক্ত করা।

৪. সড়কপথে ধর্ষণ ও হয়রানি রোধে ফিটনেসবিহীন বাহন নিষিদ্ধ, ৪০ শতাংশ নারী আসন নিশ্চিতকরণ এবং কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ চালক-সহযোগী নিয়োগ ও হেলপারদের জাতীয় পরিচয়পত্র, গ্যারান্টারসহ ডেটাবেজ তৈরি করা।

৫. সড়ক, নৌ, রেল ও আকাশপথ দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে সরকারিভাবে কমপক্ষে ২০ লাখ এবং আহতদের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া।

৬. ‘ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স রুল’ বাস্তবায়ন এবং ‘ট্রান্সপোর্ট পুলিশ ব্যাটালিয়ন’ গঠন করা।

৭. সড়ক দুর্ঘটনার তদন্ত ও সাজা দ্রুত কার্যকর এবং ট্রান্সপোর্ট পুলিশ ব্যাটালিয়ন গঠনের আগ পর্যন্ত হাইওয়ে পুলিশ, নৌ-পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর দায়িত্বশীলতা ও সচেতনতা বৃদ্ধি।

শান্তা ফারজানা লিখিত প্রতিবেদনে আরও জানান, “দৈনিক যুগান্তর, দৈনিক ইনকিলাব, দৈনিক নয়াদিগন্ত, দৈনিক দিনকাল, দৈনিক প্রথম আলো, দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক কালের কন্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, দৈনিক জনকন্ঠ, দৈনিক কালবেলাসহ ১৭ টি জাতীয় দৈনিক, বাংলা ভিশন, আরটিভি, জিটিভি, যমুনা নিউজ, মাছরাঙ্গা, এটিএন বাংলাসহ ২০ টিভি-চ্যানেল, বিবিসিবাংলা, জাগো নিউজ, বাংলা নিউজ, বিডিনিউজসহ ২২ টি নিউজ পোর্টাল এবং স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ‘সেভ দ্য রোড’ এর স্বেচ্ছাসেবীগণের দেয়া তথ্যানুসারে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।”

তিনি জানান, “দেশের আকাশ, সড়ক, রেল ও নৌপথ দুর্ঘটনামুক্ত করতে ১৮ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছে ‘সেভ দ্য রোড’। ২০২৪ সালের মার্চ থেকে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গত এক বছরে রেল, নৌ ও সড়কপথে চরম নৈরাজ্য ও আইন না মানার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে, যা নারীদের নিরাপত্তাহীনতাকে আরও উস্কে দিচ্ছে। এতে শ্লীলতাহানি, নির্যাতন ও ধর্ষণের মতো ঘটনা বেড়েছে।”

শান্তা ফারজানা বলেন, “সড়ক, রেল ও নৌপথকে নারীবান্ধব ও নিরাপদ করতে হলে মালিক, শ্রমিক, প্রশাসন ও সাধারণ জনগণের মধ্যে সমন্বয় জরুরি। পাশাপাশি দুর্ঘটনা রোধে গবেষণা ও সচেতনতা কার্যক্রম বাড়ানোর জন্য সরকারি সহায়তা প্রয়োজন।”

সংগঠনটি অন্তবর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে সুদৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

২০০৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে পথচলা শুরু করা ‘সেভ দ্য রোড’ বিগত ১৮ বছর ধরে দেশের চারটি পথ—আকাশ, সড়ক, রেল ও নৌপথ—দুর্ঘটনামুক্ত করার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করছে। সংগঠনটি তাদের মূল স্লোগান ‘পথ দুর্ঘটনা থাকবে না আর’ ধারণ করে বিভিন্ন সময় সচেতনতা, গবেষণা ও স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।