যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করতে এবং চলমান উত্তেজনা কমাতে কিছু নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার পরিকল্পনা করছে।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। মূলত, রাশিয়ার তেল ও গ্যাস শিল্পসহ বিভিন্ন খাতে আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো শিথিলের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনের চেষ্টা করা হচ্ছে।
হোয়াইট হাউস মার্কিন পররাষ্ট্র ও অর্থ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছে, রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলোর মধ্যে কোন কোনটি শিথিল করা যেতে পারে, তার একটি তালিকা প্রস্তুত করতে। তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হবে, যা দুই দেশের সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে সহায়ক হতে পারে। তবে, এই নিষেধাজ্ঞা শিথিলের মধ্যে শুধুমাত্র রুশ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এটি ট্রাম্প প্রশাসনের সম্ভাব্য চুক্তির প্রস্তুতির অংশ হতে পারে।
রাশিয়া ইতোমধ্যে জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে আগ্রহী, তবে প্রথমেই নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহার করতে হবে। ৪ মার্চ, ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এক বিবৃতিতে বলেছেন, তারা এসব নিষেধাজ্ঞাকে অবৈধ মনে করে এবং সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে হলে নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নেওয়া প্রয়োজন। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল উৎপাদক দেশ হিসেবে রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজারে প্রভাব ফেলেছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার তেল নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে এবং ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখে, তাহলে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজার তুলনামূলক স্থিতিশীল থাকতে পারে।
২০২২ সালে ইউক্রেনে হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার তেল ও গ্যাস শিল্পের ওপর কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। তবে, ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ১২ ফেব্রুয়ারি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। এরপর ১৮ ফেব্রুয়ারি, সৌদি আরবে দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা বৈঠক করেন এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি তুরস্কের ইস্তাম্বুলে দুই দেশের কূটনীতিকরা আলোচনায় বসেন। সেখানে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের ওপর থেকে ফ্লাইট নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেয় এবং কূটনৈতিক মিশনগুলো স্বাভাবিক করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
এই আলোচনার ফলস্বরূপ, দুই দেশের সম্পর্ক নতুন করে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার কাছ থেকে কী প্রত্যাশা করছে, সে বিষয়ে এখনো স্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।