যশোরে সফল নারী উদ্যোক্তা ফারহানা ইয়াসমিন। যশোরের কাজিপুর মোবারককাটি এলাকার সৈয়দ আকরাম হোসেনের স্ত্রী ফারহানা ইয়াসমিন একজন নারী কৃষি উদ্যোক্তা। তিনি কেঁচো সার (ভার্মি কম্পোস্ট) তৈরি করে সফলতা পেয়েছেন। তিনি ২০২২ সাল থেকে কেঁচো সার নিয়ে কাজ করছেন। তার তৈরি এ সার জমিতে ব্যবহার করে এলাকার কৃষক বিষমুক্ত ফসল ও সবজি উৎপাদন করতে সক্ষম হচ্ছেন। এছাড়া কৃষি অফিসের পরামর্শে রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে মাটির গুণাগুণ ঠিক রাখতে কৃষকরা তার উৎপাদিত কেঁচো সার ব্যবহারে ব্যাপকভাবে ঝুঁকে পড়েছেন।
ফারহানা ইসায়মিন ১২ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৫ ফুট প্রস্থের পৃথক ১৮টি হাউজ তৈরি করেন। প্রতি হাউজে ৫ বস্তা গোবর ও আড়াই কেজি কেঁচো থেকে প্রতি মাসে প্রায় আড়াই মণ কেঁচো সার (ভার্মি কম্পোস্ট) উৎপাদিত হয়। সবমিলিয়ে প্রতি মাসে তার এ খামার থেকে প্রায় ৭৫ মণ কেঁচো সার উৎপাদন হচ্ছে। এ খামারে ৩ জনের কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হয়েছে।
নারী কৃষি উদ্যোক্তা ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, কৃষকেরা জমির গুণাগুণ ঠিক রেখে যাতে অল্প খরচে নিরাপদ সবজি ও ফসল উৎপাদন করতে পারে এ লক্ষ্যে আমি ভার্মি কম্পোস্ট খামার নিয়ে কাজ করছি। প্রতি মাসে আমার খামারে উৎপাদিত কেঁচো সার ও কেঁচো বিক্রি করে প্রায় ৪০ হাজার টাকা আয় হচ্ছে।’
তিনি শখের বশে ২০১২ সালে ৪টা লেবু গাছের চারা দিয়ে তার উদ্যোক্তা জীবনে পা রাখেন। তারপর থেকে তার ছাদ বাগানে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৫০০ টবে বিভিন্ন ধরনের ফল, ফুল, সবজি, বনজ, ঔষধি ও শোভাবর্ধন গাছ লাগিয়ে যশোরে ব্যাপক সাড়া জাগান। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষজন তার এই ছাদ বাগান দেখতে আসে। তিনি ছাদ কৃষিতে ২০১৮ সালে জাতীয় কৃষি পদক পুরষ্কার পেয়েছেন এবং তার কর্মের স্বীকৃতি স্বরুপ ২০২০ সালে বেগম রোকেয়া দিবসে “অর্থনীতিতে স্বাবলম্বী নারী” ক্যাটাগরীতে জাতীয় পুরষ্কার পেয়েছেন।
তিনি তার কর্মগতিকে দিন দিন আরো বৃহত্তর করতে নিজের বাড়িতে বায়োফ্লোকে মৎস চাষ শুরু করেন এবং সেখানেও তিনি কৈ মাছ, ওশিং মাছ উৎপাদন করে নিজের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে তারপর আশেপাশের মানুষের কাছেও বিক্রি করেন।
তিনি তার ছাদে বাগানের পাশাপাশি মুরগির খামার করেন। তার মুরগির খামারে ৩০০টি দেশি ও পাকিস্তানি মুরগি রয়েছে এবং মুরগি থেকে ডিম সংগ্রহ করছেন।
তিনি বলেন, আল্লাহর রহমতে আমি আমার বাড়িতে উৎপাদিত ফল, সবজি, মাছ, মুরগি ও মুরগির ডিম থেকে আমিষের চাহিদা মিটিয়েও আশেপাশে বিক্রি করে দেশের অর্থনীতিতে সামান্য অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছি। ফারহানা ইয়াসমিন সকলের কাছে দোয়া কামনা করেন।