ঢাকা ১২:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
ঢাকা ওয়াসায় কর্মচারীরা বিক্ষোভ: ডিএমডি (অর্থ ও প্রশাসন) আকতারুজ্জামানকে বের করে দিয়েছে কর্মচারীরা মাগুরায় শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী কাত্যানী পূজা মিঠাপুকুরে জোরপূর্বক কৃষকের জমির ধান কেটে নেওয়ার অভিযোগ অন্তর্বর্তীকালীন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন: জনমনে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে শোভাযাত্রা শ্রীমঙ্গলে সেনাবাহিনীর অভিযানে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক- ৬ যশোরে টেন্ডার নিয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে লাঞ্ছিতের ঘটনায় যুবদল নেতা বহিষ্কার ওজন নিয়ে সমালোচনার জবাবে সোজাসাপটা জবাব দিলেন সামান্থা সংসার করতে চান বাঁধন, একান্ত সঙ্গীর খোঁজে ক্ষমতা হস্তান্তরের ঘোষণা দিলেন বাইডেন ঝিনাইদহের সাবেক এমপি তাহজীব সিদ্দিকী গ্রেপ্তার বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল

দাকোপে ধানক্ষেতে পোকার আক্রমণে দিশেহারা কৃষক

খুলনার দাকোপ উপজেলায় চলতি মৌসুমে আমন ধানক্ষেতে মাজরা ও লেদা পোকার আক্রমণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। একইসাথে প্রতি রাতে ইঁদুরও ধান গাছ কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে। পোকা দমনে কৃষকরা বিভিন্ন ধরনের কিটনাশক স্প্রে এবং ইঁদুর দমনে বিষ বা নানা পদ্ধতি ব্যবহার করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। ফলে আমন চাষে লোকসানের আশঙ্কায় এলাকার হাজার হাজার কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় গত বছরের মত এবারও মোট ১৯ হাজার ৩৬৫ হেক্টর জমিতে আমনের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে উপসি ১৭ হাজার ১৮৫ হেক্টর, স্থানীয় জাত ১ হাজার ৯৮০ হেক্টর ও হাইব্রিড ২০০ হেক্টর। বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে ঘুরে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় সব এলাকায় ব্যাপকভাবে মাজরা ও লেদা পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে।

পাশাপাশি ইঁদুরের উৎপাতও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দিনের বেলায় ইঁদুরগুলো গাছে বা মাটির গর্তে লুকিয়ে থাকে। আর রাতে ইঁদুরে ধান গাছ কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে। ফলে ধান গাছ শুকিয়ে লাল হয়ে মারা যাচ্ছে। অতি বৃষ্টির কারণে ধান ক্ষেতে পোকার উপদ্রব বেড়েছে বলে কৃষকরা মনে করেন। পোকার আক্রমণ থেকে ধানক্ষেত রক্ষায় কৃষকরা বারবার বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক স্প্রে করছেন। আবার ইঁদুর দমনে বিষ বা নানা পদ্ধতি ব্যবহার করেও ইঁদুরের উৎপাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না। ফলে আমন চাষে লোকসানের আশঙ্কায় এলাকার হাজারো কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। আর আমন উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রাও অর্জিত না হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

উপজেলার কৈলাশ গঞ্জ ইউনিয়নের বনলাউডোব গ্রামের কৃষক সুজিতহালদার বলেন, এ বছর তিনি ৩০ বিঘা জমিতে আমনের চাষ করেছেন। কিন্তু প্রায় ২ বিঘার মত জমির ধান গাছ ইঁদুরে কেটে সাবাড় করে দিয়েছে। ধান গাছে ফলন আসার মুহুর্তে মজরা ও লেদা পোকার আক্রমণ ও ইঁদুরের উৎপাত বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক স্প্রে করে পোকা থেকে ফসল রক্ষার চেষ্টা করছেন।

তিনি বলেন, মাজরা পোকার থেকেও বেশি ক্ষতি করছে ইঁদুরে। ইঁদুর দমনে বিভিন্ন ধরনের বিষ ব্যবহার করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। ফলে লোকসানের আশংকায় তিনি হতাশ হয়ে পড়েছেন।

চুনকুড়ি এলাকার কৃষক শুভংকর বিশ্বাস জানান, অতিবৃষ্টির কারনে আমন ফসলে মাজরা, লেদা ও পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণ বেড়েছে। বিগত বছরগুলোতে একবার কিটনাশক স্প্রে করলেই ফসল ঘরে তোলা সম্ভব হতো। আর এ বছর তিন থেকে চারবার কিটনাশক স্প্রে করেও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না যে ফসল ঘরে উঠবে। এ বছর এমনিতেই দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে ব্যাপক খরচ হয়েছে তারপর আবার পোকার আক্রমণ ও ইঁদুরের উৎপাত থেকে ফসল রক্ষায় হিমসিম খেতে হচ্ছে। এতে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এছাড়া বানিশান্তা, কামারখোলা, গুনারী, কামনিবাসিয়া ও বটবুনিয়া এলাকার আরো একাধিক কৃষক একই অভিমত ব্যক্ত করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, এবছর ইঁদুরে ১৯৩ হেক্টর জমির ধান গাছ কেটে নষ্ট করে ফেলেছে। আর মাজরা পোকাসহ বিভিন্ন পোকার আক্রমণও বেড়েছে। তবে এসব পোকা ধানের তেমন একটা ক্ষতি করে না। এসব পোকা ও ইঁদুর দমনে প্রত্যেক ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে উঠান বৈঠক করা হচ্ছে। এছাড়া কৃষকদের জন্য আমরা ভ্রাম্যমাণ কৃষি পরামর্শ কেন্দ্র চালু করেছি। তাছাড়া প্রত্যেক দোকানে পর্যাপ্ত পরিমানে কিটনাশক রাখার পরামর্শ ও কৃষকদের সচেতন করার চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ঢাকা ওয়াসায় কর্মচারীরা বিক্ষোভ: ডিএমডি (অর্থ ও প্রশাসন) আকতারুজ্জামানকে বের করে দিয়েছে কর্মচারীরা

দাকোপে ধানক্ষেতে পোকার আক্রমণে দিশেহারা কৃষক

আপডেট সময় ০৮:০৩:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০২৪

খুলনার দাকোপ উপজেলায় চলতি মৌসুমে আমন ধানক্ষেতে মাজরা ও লেদা পোকার আক্রমণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। একইসাথে প্রতি রাতে ইঁদুরও ধান গাছ কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে। পোকা দমনে কৃষকরা বিভিন্ন ধরনের কিটনাশক স্প্রে এবং ইঁদুর দমনে বিষ বা নানা পদ্ধতি ব্যবহার করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। ফলে আমন চাষে লোকসানের আশঙ্কায় এলাকার হাজার হাজার কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় গত বছরের মত এবারও মোট ১৯ হাজার ৩৬৫ হেক্টর জমিতে আমনের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে উপসি ১৭ হাজার ১৮৫ হেক্টর, স্থানীয় জাত ১ হাজার ৯৮০ হেক্টর ও হাইব্রিড ২০০ হেক্টর। বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে ঘুরে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় সব এলাকায় ব্যাপকভাবে মাজরা ও লেদা পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে।

পাশাপাশি ইঁদুরের উৎপাতও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দিনের বেলায় ইঁদুরগুলো গাছে বা মাটির গর্তে লুকিয়ে থাকে। আর রাতে ইঁদুরে ধান গাছ কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে। ফলে ধান গাছ শুকিয়ে লাল হয়ে মারা যাচ্ছে। অতি বৃষ্টির কারণে ধান ক্ষেতে পোকার উপদ্রব বেড়েছে বলে কৃষকরা মনে করেন। পোকার আক্রমণ থেকে ধানক্ষেত রক্ষায় কৃষকরা বারবার বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক স্প্রে করছেন। আবার ইঁদুর দমনে বিষ বা নানা পদ্ধতি ব্যবহার করেও ইঁদুরের উৎপাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না। ফলে আমন চাষে লোকসানের আশঙ্কায় এলাকার হাজারো কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। আর আমন উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রাও অর্জিত না হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

উপজেলার কৈলাশ গঞ্জ ইউনিয়নের বনলাউডোব গ্রামের কৃষক সুজিতহালদার বলেন, এ বছর তিনি ৩০ বিঘা জমিতে আমনের চাষ করেছেন। কিন্তু প্রায় ২ বিঘার মত জমির ধান গাছ ইঁদুরে কেটে সাবাড় করে দিয়েছে। ধান গাছে ফলন আসার মুহুর্তে মজরা ও লেদা পোকার আক্রমণ ও ইঁদুরের উৎপাত বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক স্প্রে করে পোকা থেকে ফসল রক্ষার চেষ্টা করছেন।

তিনি বলেন, মাজরা পোকার থেকেও বেশি ক্ষতি করছে ইঁদুরে। ইঁদুর দমনে বিভিন্ন ধরনের বিষ ব্যবহার করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। ফলে লোকসানের আশংকায় তিনি হতাশ হয়ে পড়েছেন।

চুনকুড়ি এলাকার কৃষক শুভংকর বিশ্বাস জানান, অতিবৃষ্টির কারনে আমন ফসলে মাজরা, লেদা ও পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণ বেড়েছে। বিগত বছরগুলোতে একবার কিটনাশক স্প্রে করলেই ফসল ঘরে তোলা সম্ভব হতো। আর এ বছর তিন থেকে চারবার কিটনাশক স্প্রে করেও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না যে ফসল ঘরে উঠবে। এ বছর এমনিতেই দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে ব্যাপক খরচ হয়েছে তারপর আবার পোকার আক্রমণ ও ইঁদুরের উৎপাত থেকে ফসল রক্ষায় হিমসিম খেতে হচ্ছে। এতে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এছাড়া বানিশান্তা, কামারখোলা, গুনারী, কামনিবাসিয়া ও বটবুনিয়া এলাকার আরো একাধিক কৃষক একই অভিমত ব্যক্ত করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, এবছর ইঁদুরে ১৯৩ হেক্টর জমির ধান গাছ কেটে নষ্ট করে ফেলেছে। আর মাজরা পোকাসহ বিভিন্ন পোকার আক্রমণও বেড়েছে। তবে এসব পোকা ধানের তেমন একটা ক্ষতি করে না। এসব পোকা ও ইঁদুর দমনে প্রত্যেক ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে উঠান বৈঠক করা হচ্ছে। এছাড়া কৃষকদের জন্য আমরা ভ্রাম্যমাণ কৃষি পরামর্শ কেন্দ্র চালু করেছি। তাছাড়া প্রত্যেক দোকানে পর্যাপ্ত পরিমানে কিটনাশক রাখার পরামর্শ ও কৃষকদের সচেতন করার চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।