মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের লংগুরপাড় গ্রামের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত ধলাই নদীর ভাঙ্গনে দীর্ঘদিন থেকে ঝুঁকিতে আছেন নদীপাড়ের পরিবারগুলো।
নদীর বাঁধটি বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে, যা বন্যা থেকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় মেরামত না হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সদর ইউনিয়নবাসীকে নদীভাঙনের হাত থেকে সুরক্ষার জন্য ধলাই নদীর ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ মেরামতের দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা। এ বাঁধ নিয়ে উৎকণ্ঠায় রয়েছে ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাঁধের বেশ কয়েকটি স্থানে দুর্বলতা দৃশ্যমান, কিছু স্থানে বড় ছোট গর্ত দেখা গেছে এবং কিছু জায়গায় বাঁধ ডেবে গেছে। ভাঙা অংশ দেখলে ভয়ে আঁতকে উঠছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, দ্রুত বাঁধটি নির্মাণ করা না হলে ভারত থেকে ফের ঢল এলে যেকোনো সময় প্লাবিত হতে পারে সদর ইউনিয়েন ১৩টি গ্রাম। আগামী বর্ষাকালে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেই এই ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধে ভাঙ্গন দিবে। বন্যায় প্লাবিত হবে লংগুরপাড়, রাজারগাঁও, বাল্লারপাড়, উজিরপুর, দক্ষিণ বালিগাঁও, উত্তর বালিগাঁও, পশ্চিম কুমড়াকাপন, কান্দিগাঁও, গন্ডামারা, বাদে উবাহাটা ও চৈতন্যগঞ্জ নারায়নপুর রামপাশা গ্রাম।
স্থানীয় লোকজনের বক্তব্য, বর্ষার আগেই নদী প্রতিরক্ষা বাঁধ মেরামতের কাজ শেষ করতে হবে। না হলে বন্যার আতঙ্কে থাকতে হবে। গত আগস্ট মাসে ভারত থেকে নেমে আসা বন্যার পানির কারণে ধলাই নদীতে পানি প্রবাহ বেড়ে গিয়েছিল, যার ফলে অনেক স্থানে পানি চুষে পড়েছে।
কমলগঞ্জ পৌর শহর ও সদর ইউনিয়নের আশেপাশের কয়েক হাজার মানুষ শঙ্কিত অবস্থায় রয়েছে। বিশেষ করে, স্কুল, মাদ্রাসা, সরকারি-বেসরকারি অফিস, বাজার, রেলওয়ে স্টেশনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং কৃষি জমি রয়েছে।
এলাকাবাসীদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, ব্লক দ্বারা বাঁধ নির্মাণ তাদের দীর্ঘদিনের দাবি। কিন্তু আজও এ দাবি পূরণ হয়নি। বিগত ৪-৫ বছর আগে বাঁধ নির্মাণ হলেও সেখানে কোনো ব্লক ব্যবহার করা হয়নি। সেই অংশসহ বর্তমানে একসাথে ২ শত মিটার বাঁধ ঝুঁকিতে। বর্তমানে গোরাঙ্গঁ দত্ত এর বাড়ির অংশটুকু বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
ওই ভাঙা বাঁধের এলাকা দেখতে আসছেন বিভিন্ন স্থানের মানুষজন। বাঁধটি দেখতে এসে আঁতকে উঠেছেন বলে জানান সদর ইউনিয়নের উত্তর বালিগাঁও গ্রামের রতন দত্ত।
লংগুরপাড়ের ধলাই নদীপাড়ের বাসিন্দা শৈলেন্দ্র ভৌমিক জানান, আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ব্লক দ্বারা বাঁধ নির্মাণ। কিন্তু আজও এ দাবি পূরণ হয়নি।
রাজারগাঁও গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা মতিন মিয়া জানান, এই স্থানে ভাঙ্গন দিলে কয়েক গ্রাম প্লাবিত হবে। বিশেষ করে কৃষি খাতে ক্ষতি হবে।
কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হান্নান বলেন, নদী ভাঙ্গনের বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচার স্বার্থেই দ্রুত গতিতে মেরামত করা জরুরী। এজন্য শুষ্ক মৌসুমেই পানি উন্নয়ন বোর্ড যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. খালেদ বিন অলীদ জানান, লংগুরপাড় গ্রামটি সরেজমিন পরিদর্শন করে দ্রুত ধলাই নদীর বাঁধ মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।