সম্প্রতি রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ও সংবিধান বাতিলের দাবিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং নাগরিক কমিটি। জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া এই সংগঠনটি গত কয়েকদিন ধরে বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সাথে বৈঠক করে আসছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এসব কার্যক্রম দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি নতুন সংকট তৈরি করতে পারে।
রাষ্ট্রপতির অপসারণের মতো পদক্ষেপ নিয়ে বিএনপি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, তারা মনে করে যে এতে নির্বাচন পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে, ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলেছেন, তারা রাজনৈতিক দল গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন না এবং তাদের উদ্দেশ্য ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করা নয়। ছাত্র নেতা আবদুল হান্নান মাসুদ জানিয়েছেন, তারা শুধু একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরির জন্য কাজ করছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং নাগরিক কমিটির নেতারা জানিয়েছেন, বর্তমানে তারা তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন। সরকারে থাকা তিন ছাত্র প্রতিনিধি প্রকাশ্যে কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রমে যুক্ত নেই। তবে অনেকেই বলছেন, ছাত্রদের এসব উদ্যোগ একটি রাজনৈতিক দলের গঠন প্রক্রিয়ার প্রথম পর্যায় হতে পারে।
নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী জানিয়েছেন, তারা তরুণদের ক্ষমতায় আসতে চান, কিন্তু রাজনৈতিক দল গঠন করবেন কিনা তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত নয়। তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলো যদি তরুণদের সুযোগ না দেয়, তবে তাদের জন্য ভবিষ্যতে ক্ষমতায় যাওয়া কঠিন হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, ছাত্ররা যদি সত্যিই একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করতে চায়, তা অস্বাভাবিক হবে না। তবে এর জন্য সময় ও পরিকল্পনা প্রয়োজন। তিনি বলেন, যদি নতুন দলটি জনগণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে মিলে যায়, তবে তারা সফল হতে পারে।
এদিকে, ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের মধ্যে যুক্ত হওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন পক্ষ থেকে সুযোগ সুবিধা দেয়ার বিষয়টি আলোচনা চলছে। তারা বলছেন, যদি কেউ রাজনৈতিক দল গঠনের চেষ্টা করে, তাহলে সেটি তাদের অধিকার। তবে ছাত্ররা এখন পর্যন্ত সরকারের বিপক্ষে কোনো রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করছে না।
মোটকথা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং নাগরিক কমিটির কার্যক্রম এখন রাজনৈতিক মহলে গুরুত্ব পাচ্ছে। তাদের ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ড এবং রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।