দেশের বৃহৎ প্রকল্প পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের উভয় ইউনিটের স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সম্প্রতি রাশিয়া থেকে শিপমেন্ট করা হয়েছে। এই যন্ত্রপাতিগুলো তৈরি করেছে রসাটমের অধীনস্থ একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান (Specialized Scientific Research Institute for Instrumentation Engineering-SNIIP)। খুব শীঘ্রই যন্ত্রপাতিগুলো প্রকল্প সাইটে ডেলিভারি করা হবে।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বিকেলে রসাটম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রথম ইউনিটের জন্য ১৫টি এবং দ্বিতীয় ইউনিটের জন্য ৮টি রেডিয়েশন মনিটরিং সিস্টেম ইউনিট (ARMS) শিপমেন্ট করা হয়েছে। রূপপুর প্রকল্পের বিশেষ চাহিদা বিবেচনা করে এই সিস্টেমগুলো তৈরি করা হয়েছে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ ব্যাক্তিগত ব্যবহারের জন্য ৩০০টি ডোজিমিটার এবং ফিল্টার হোল্ডারের একটি ব্যাচ প্রকল্প সাইটে এসে পৌঁছাবে।
এ সকল যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান SNIIP এর প্রধান নির্বাহী আলেক্সান্ডার কার্টসেভ বলেন, “স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার জন্য নির্ধারিত যন্ত্রপাতিগুলো একটি সিঙ্গেল প্যাকেজে রূপপুর সাইটে ডেলিভারি করা হচ্ছে। রূপপুর প্রকল্পে প্রথমবারের মতো এজাতীয় সল্যুশন ব্যবহৃত হতে যাচ্ছে। ব্যাক্তিগত ব্যবহারের জন্য ডোজিমিটার এসে পৌঁছাবার আগেই আমরা মূল হার্ডওয়্যার পেয়ে গেছি। আমরা সত্যিই আনন্দিত যে, প্রকল্পের স্টার্টআপের জন্য অতি প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো শীঘ্রই হাতে পাচ্ছি।”
ইতোপূর্বে SNIIP, কক্ষের অভ্যন্তরে অব্যাহত রেডিয়েশন মনিটরিং এর জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, ডিটেকশন ইউনিট ও বিভিন্ন ডিভাইস শিপমেন্ট করেছে। এছাড়াও, ব্যাক্তিগত ডোজিমেট্রিক মনিটরিং সিস্টেমের জন্য প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারও ইতিমধ্যে প্রকল্প সাইটে ডেলিভারি করা হয়েছে। এই সিস্টেম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে কর্মরত ব্যাক্তিদের দ্বারা ব্যবহৃত ডোজিমিটার থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। আরও যেসব প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এসে পৌঁছেছে তার মধ্যে রয়েছে তথ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ হার্ডওয়্যার, রেডিয়েশন দূষণ মনিটরিং যন্ত্রপাতি, ল্যাবরেটরি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি।
স্বয়ংক্রিয় রেডিয়েশন মনিটরিং ব্যবস্থার সাহায্যে নির্ধারিত বস্তুর রেডিয়েশন প্যারামিটার সংগ্রহ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ এবং ডাটা ডিসপ্লে করা হয়ে থাকে। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পারমাণবিক জ্বালানীচক্র প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন বিজ্ঞান ও গবেষণা কেন্দ্রে এই সিস্টেমগুলো ব্যবহৃত হয়।
রাশিয়ার কারিগরী ও আর্থিক সহায়তায় রূপপুরে নির্মিত হচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। প্রকল্পটিতে দুটি বিদ্যুৎ ইউনিট থাকবে এবং এর মোট উৎপাদন ক্ষমতা হবে ২,৪০০ মেগাওয়াট। প্রতিটি ইউনিটে স্থাপিত হবে ৩+ প্রজন্মের রুশ ভিভিইআর-১২০০ রিয়্যাক্টর যা সকল আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা চাহিদা পূরণে সক্ষম। রসাটম প্রকৌশল শাখা জেনারেল ডিজাইনার এবং কন্ট্রাকটর হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।